আরব বিশ্বের পরিচিত চলচ্চিত্র সমালোচক, তিউনিশিয়ার ফেরিদ বুগেদির তার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনীচিত্র "হালফায়ুইন: বয় অন দ্য টের্যাসেস" (১৯৯০) দিয়েই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রে নিজের জায়গা করে নিয়েছেন। অনেকটা ত্রুফোর 'ফোর হান্ড্রেড ব্লোজে'র মতো।
বুগেদির ছবিতে বালক থেকে কিশোর হতে থাকা নূরা (অভিনয় করেছে সেলিম বুগেদির, পরিচালকের ভাস্তে) ও তিউনিশিয়ার মুসলমান সমাজের এক সমান্তরাল চিত্রের দেখা পাওয়া যায়। একদিকে সাবালকত্বের দিকে পা বাড়ানো নূরা নারী শরীর সম্পর্কে যেমন সচেতন হয়ে উঠতে থাকে, আবার একইসাথে তিউনিশিয়ো সরকারের দমন ও নীপিড়নমূলক কার্যক্রমের ব্যাপারেও সতর্ক হয়ে ওঠে। নূরার কাছে রাষ্ট্র ও পরিবারের পিতা যেন সমান হয়ে উঠতে থাকে।
নারীর শরীরের প্রতি তার যে স্বাভাবিক আকর্ষণ, সেই একই আকর্ষণ তার স্বাধীন ও মুক্ত হয়ে ঘুরে বেড়ানোতে। নারীদের তুর্কি স্নানাগার থেকে বিতাড়িত এক বালকের কিশোর হয়ে ওঠা, বয়সের নতুন চৌকাঠে পা রাখা। সেখানে সে নতুন করেই নিজেকে, নিজের চারপাশকে বুঝতে চায়। তাই তো আমরা দেখি খাঁচার পাখিকে বের করে দেয়ার সাথে সাথে নূরা নারীর শরীর সম্পর্কে নিজের কৌতুহল মেটায়। সে স্বাধীন হয় বটে, কিন্তু রাষ্ট্র তার জ্যেষ্ঠ বন্ধু, এক সঙ্গীতশিল্পীকে, সামান্য চিকা লেখার দায়ে মারধর ও গ্রেফতার করে। আর ঘরে পিতা তাকে সর্বদাই প্রহারের জন্য প্রস্তুত থাকে।
পরিচালক ও সমালোচক বুগেদি এই ছবিতে ফ্রয়েডীয় কর্তনভীতি বা ক্যাসট্রেশন অ্যাংজাইটিকেও দৃশ্যায়িত করেছেন মুন্সিয়ানার সাথে। এই ছবি শুধু এক কিশোরের বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ ও আবিষ্কারের ছবি নয়। এই ছবি সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতি সচেতন হয়ে ওঠারও দলিল বটে।