নার্গিস আবইয়ার। প্রথম ইরানি নারী চলচ্চিত্রকার, যার 'নাফাস' (Breath) ছবিটি গেল বছরের অস্কারে মনোনয়ন পেয়েছিল। এর আগে ইরাক-ইরানের যুদ্ধের ওপর তাঁর নির্মিত 'ট্রেঞ্চ ১৪৩' সাড়া জাগিয়েছিল ‘ফজর আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে’ দুটি পুরস্কার জিতে। ফার্সি সাহিত্যে স্নাতক নার্গিস গল্পকার হিসেবেও সুপরিচিত। তাঁর নতুন ছবি 'শাবি কে মহ কমেল শোদ' (যে রাতে চাঁদ পূর্ণতা পেয়েছিল)-এর শুটিং করতে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে এলেন এই নির্মাতা। ঢাকায় তাঁর শুটিং টিমকে সার্বিক সহযোগিতা দেয় ‘রেইডাস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড’।
শুটিংয়ের ফাঁকেই পার্থ সনজয়কে সাক্ষাৎকারটি দিয়েছেন নার্গিস আবইয়ার। ফার্সি ভাষায় দেওয়া তাঁর সাক্ষাৎকারটি অনুবাদে সহায়তা করেছেন মো. মুমিত আল রাশীদ।
প্রশ্ন : কেমন লাগছে ঢাকা?
নার্গিস : মনে হচ্ছে, তেহরানেই আছি। এখানকার সংস্কৃতি, মানুষ সবকিছুই আমার আপন লাগছে। আপনাদের সাংস্কৃতিক যেমন দীর্ঘ ঐতিহ্য আছে, ইরানেরও তাই। শিকড়টাকে আমরা খুব মূল্য দিই। আমার মনে হয়েছে, আপনাদেরও তাই।
প্রশ্ন : শুটিং করতে বাংলাদেশ কেন?
নার্গিস : এটা কাহিনীর প্রয়োজনে। আমরা আরো কয়েকটি দেশে যাব। এই ছবির গল্পে নায়ক-নায়িকা তাদের প্রয়োজনে তৃতীয় একটি দেশে যায়। সেখান থেকে তারা আরেকটি দেশে যাওয়ার চেষ্টা করে। তৃতীয় দেশটি হিসেবে আমরা বাংলাদেশকে বেছে নিয়েছি।
প্রশ্ন : ইরানি চলচ্চিত্র আজ বিশ্বে আলাদা মর্যাদায়। আপনার ছবিও অস্কারে মনোনীত হয়েছে।
নার্গিস : দীর্ঘ ২০ বছর ধরে ইরানের সিনেমা শিল্প উন্নতির দিকে যাচ্ছে। এই সময়ে অসংখ্য পুরুষ পরিচালকের পাশাপাশি নারী পরিচালকরা এগিয়ে এসেছে। আমার ছবি নাফাস, যেখানে একজন নারীর গল্প বলা হয়েছে। তা ইরানের কোনো নারী নির্মাতার প্রথম অস্কার মনোনয়ন পেয়েছে। এটা আমাকে আত্মবিশ্বাসী করেছে, আমি নারীদের নিয়ে ছবি বানাতে পারব। যেহেতু আমি একজন নারী। আর ইরানের সিনেমা শিল্প বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। আমি আমার নারীদের কথাই আমার সিনেমায় বেশি করে বলতে চাই। আমি কিন্তু নারীবাদী নই। আমি বিশ্বাস করি, নারী-পুরুষে কোনো ভেদাভেদ নেই।
প্রশ্ন : নির্মাণের অনুপ্রেরণাটা কোথা থেকে আসে?
নার্গিস : বাহমান কোবাদি, বিখ্যাত ইরানি চলচ্চিত্রকার। তাঁর ছবি 'কচ্ছপগুলো আকাশে উড়ে যায়' দ্বারা আমি একসময় দারুণ অনুপ্রাণিত হয়েছিলাম। আসলে সিনেমার ভাষা সর্বজনীন। আমি সেই ভাষাতে আমার কথা সবার কাছে পৌঁছে দিতে চাই। আমি আমার সিনেমাতে যতটুকু সম্ভব মানুষের গল্প বলতে চাই।